Monday, May 9, 2016

এটিএম বুথ থেকে যেসব উপায়ে কার্ডের তথ্য চুরি হয়........ll


এটিএম স্কিমিং বা এটিএম জালিয়াতির মাধ্যমে চোর এটিএম কার্ডের বিভিন্ন তথ্য চুরি করে হাতিয়ে নেয় টাকা। এটিএম কার্ডের তথ্য চুরি করার জন্য চোর ফেক পিন প্যাড, স্কিমার, ক্যাশ ট্র্যাপার ইত্যাদি এটিএম মেশিনে ব্যবহার করে থাকে।
ফলে মানুষ বুঝতেই পারে না কখন কিভাবে তাদের এটিম কার্ডের তথ্য চুরি হয়ে গেছে। যতক্ষণে বুঝতে পারে ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে যায়। সম্প্রতি ঢাকায় কয়েকটি ব্যাংকের এটিএম বুথ থেকে এ উপায়ে গ্রাহকদের অজান্তে টাকা তুলে নেয়ার ঘটনা ঘটেছে।
এটিএম স্কিমিংয়ে অনেক সময় ব্যবহার করা হয় উচ্চ প্রযুক্তি। ফলে এই প্রযুক্তি নির্ভর চোর খুব সহজেই এটিএম থেকে টাকা চুরি করে পার পেয়ে যায়।
এখন কথা হচ্ছে কীভাবে এই এটিএম স্কিম থেকে বাঁচা যায়? কিন্তু তার আগে জানতে হবে এটিএম স্কিমিং কীভাবে হয়। নিচে কয়েকটি এটিএম স্কিমিং ও এর থেকে বাঁচার কিছু উপায় দেয়া হল।
* কার্ড স্কিমার : স্কিমার ডিভাইসটি এটিএম মেশিনের পাশেই কার্ডের তথ্য চুরি করার জন্য বসানো থাকে। এই ডিভাইসটির মাধ্যমে চোর কার্ডের পিন নম্বর, কার্ড ও অ্যাকাউন্ট নম্বর, টাকার পরিমাণ ইত্যাদি পেয়ে যায়। কার্ড স্কিমারটি এটিএম মেশিনের কার্ড প্রবেশ করানোর মুখেই বাসানো থাকে অনেক সময়। গ্রাহক বুঝতে না পারায় এর ভিতর দিয়ে এটিএম কার্ড প্রবেশ করার সঙ্গে সঙ্গেই কার্ডের সকল তথ্য কার্ড স্কিমার এ জমা হয়ে যায়।
* লুপ পদ্ধতি : এই পদ্ধতিতে চোর টেপ জাতীয় কিছু ব্যবহার করে। এই টেপ কার্ড স্লটে বসানো থাকে। গ্রাহক কার্ড প্রবেশ করানোর পর সেই টেপ এটিএম কার্ডটিকে ব্লক করে দেয়। ওয়্যারলেস ক্যামেরা বা দুর থেকে গ্রাহকের পিন দেখে নেয় চোর। যখন গ্রাহক ব্লক কর্ডের জন্য ব্যাংকে অভিযোগ জানায় তখন চোর সেই কার্ডকে আবার অ্যাকটিভ করে গ্রাহকের টাকা চুরি করে নেয়।
* নকল পিন প্যাড : এটিএম মেশিনের কিপ্যাড এর ওপর নকল কিপ্যাড বসিয়ে চোর গ্রাহকের কার্ডের পিন নম্বর চুরি করে থাকে। নকল কিপ্যাড এমনভাবে মেশিনের ওপর বসানো থাকে গ্রাহক স্বাভাবিকভাবেই এটিএম থেকে টাকা উত্তোলন করতে পারে, কিন্তু মনের অগোচরেই কার্ডের পিন নম্বর চলে যায় চোরের কাছে।
* ক্যাশ ট্রপিং : এই পদ্ধতি লুপ এর মতোই। সেখানে গ্রাহকের কার্ডকে আটকানো হয় আর এখানে এটিএম থেকে বের হওয়ার পথে টাকাকে আটকানো হয়। এটিএম এর লেনদেন ঠিক-ই হয়। কিন্তু টাকা বের হওয়ার মুখে আটকে থাকে। মেশিন নষ্ট বা লেনদেন হচ্ছে না ভেবে গ্রাহক চলে গেলে চোর সেই টাকা হাতিয়ে নেয়।
* ফিশিং পদ্ধতি : পুরোটাই একটা নকল এটিএম মেশিন। চোরের শুধু দরকার গ্রাহকের কার্ডের তথ্য। এমন নকল এটিএম মেশিন মার্কেট কিংবা নিরাপদ এলাকাতে চোর সুযোগ বুঝে বসিয়ে থাকে। গ্রাহক বুঝতে না পেরে সেই নকল এটিএম মেশিনে কার্ড প্রবেশ করালে দেখতে পারে মেশিন নষ্ট বা যথেষ্ট পরিমাণ টাকা নেই, কিন্তু ততক্ষণে কার্ডের সকল তথ্য চোরের কাছে চলে যায়।
এটিএম স্কিমিং থেকে বাঁচার কিছু উপায়
∙ সব সময় একই এটিএম মেশিন ব্যবহার করা উচিত যেন এর কোনো পরিবর্তন আপনি বুঝতে পারেন। অর্থাৎ এতে কোনো স্কিমিং ডিভাইস লাগানো হলে যেন আপনি বুঝতে পারেন।
∙ রাস্তার পাশের এটিএম মেশিন ব্যবহার না করে ব্যাংক এর ভেতরের এটিএম মেশিন ব্যবহার ঝুঁকিমুক্ত।
∙ অপরিচিত এটিএম মেশিন যদি হয়ে থাকে ভালো করে দেখে নিন কার্ড প্রবেশ করার মুখে কোনো অতিরিক্ত যন্ত্র বা কোনো প্রকার টেপ লাগানো আছে কিনা, অতিরিক্ত ওয়্যারলেস ক্যামেরা লাগানো আছে কিনা। কিংবা টাকা বের হওয়ার পথে কিছু লাগানো আছে কিনা যা দেখতে অস্বাভাবিক।
∙ কোনো ব্যাক্তি যদি দীর্ঘ সময় এটিএম বুথে থাকে তবে সেই এটিএম মেশিন ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন।
∙ যদি কার্ড মেশিনে আটকে যায় তৎক্ষণাৎ চলে যাবেন না। ব্যাংকে ফোন করে অভিযোগ দিয়ে তারপর বের হবেন।
∙ ইমেইলে কার্ড এর তথ্য চাওয়ার লিংকে ক্লিক করে কার্ডের কোনো তথ্য দিবেন না। আর ইমেইলটি আপনার ব্যাংক থেকে এসেছে কিনা তা যাচাই করে দেখবেন।
সুত্র: আমার দেশ ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০১৬, ০৩:১৫ পূর্বাহ্ন

No comments:

Post a Comment

Popular posts