বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক- বারমুডা ট্রায়াঙ্গল। উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরে অবস্থিত এক রহস্যময় অঞ্চলের নাম। এ অঞ্চল থেকে বেশ কিছু জাহাজ ও উড়োজাহাজ রহস্যজনক ভাবে নিখোঁজ হওয়ায় কথা বলা হয়ে থাকে। অনেকে মনে করেন ঐ সকল অন্তর্ধানের কারণ নিছক দুর্ঘটনা, আবার কারও কারও মতে এসবের পেছনে দায়ী হল অতিপ্রাকৃতিক কোনও শক্তি।
সাধারণ জনগণ থেকে শুরু করে গবেষক-অর্থাৎ সবার কাছে বারমুডা ট্রায়াঙ্গল যেন এক বিভ্রান্তির নাম। তবে সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা কয়েকটি গর্তের সন্ধান পেয়েছেন, যা বারমুডা ট্রায়াঙ্গলের রহস্য উন্মোচনে ভূমিকা রাখবে বলে তারা মনে করছেন।
সম্প্রতি নরওয়ের উপকূলবর্তী বারেন্টস সাগরের তলদেশে বিশাল আকারের বেশ কয়েকটি খাদ বা গর্ত আবিষ্কারের ঘটনায় বারমুডা ট্রায়াঙ্গলের রহস্যভেদের একটি সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইলের তথ্য অনুযায়ী, বিজ্ঞানীরা আধা মাইল পর্যন্ত চওড়া ও দেড়শো ফুট পর্যন্ত গভীরতাসম্পন্ন কয়েকটি গর্তের সন্ধান পেয়েছেন। ধারণা করা হচ্ছে, প্রাকৃতিক গ্যাসসমৃদ্ধ নরওয়ে উপকূলে সৃষ্ট মিথেন গ্যাসের কারণে গর্তগুলো তৈরি হয়েছে।
সানডে টাইমসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আর্কটিক ইউনিভার্সিটি অব নরওয়ের গবেষকরা জানান, ‘পশ্চিম-মধ্যাঞ্চলীয় বারেন্টস সাগরের একটি এলাকার তলদেশে বেশ কয়েকটি বিশালাকারের গর্তের হদিস মিলেছে। সম্ভবত গ্যাসের প্রচণ্ড চাপই গর্তগুলো সৃষ্টির কারণ।’
বিজ্ঞানীদের ব্যাখ্যা অনুযায়ী, এসব গর্তে বিস্ফোরণের কারণে গর্তের মুখ খুলে গিয়ে তা সাগরের ওই এলাকায় চলাচলকারী জাহাজ কিংবা বিমানের জন্য ঝুঁকি তৈরি করে। জাহাজ কিংবা বিমানগুলো হারিয়ে যায়।
রুশ বিজ্ঞানী ইগর ইয়েলতসভ বলেন, ‘বারমুডা ট্রায়াঙ্গলকে গ্যাস হাইড্রেট বা জমাট বরফের স্ফটিকের প্রতিক্রিয়াজনিত ফলাফল বলে মনে করা হচ্ছে। গ্যাস হাইড্রেটগুলো মিথেন আইসের সঙ্গে মিশ্রিত হতে শুরু করে এবং পরে তা গ্যাসে পরিণত হয়। পুরো প্রক্রিয়াটি হিমবাহের মতো কিংবা পারমাণবিক প্রতিক্রিয়ার মতো ঘটতে থাকে এবং প্রচুর পরিমাণে গ্যাস উৎপন্ন হয়। এতে সাগর উষ্ণ হয়ে পড়ে এবং প্রচুর পরিমাণে গ্যাসমিশ্রিত পানিতে জাহাজ ডুবে যায়।’
No comments:
Post a Comment