ক্যারিবিয়ান সামুদ্রের ‘ফ্লাইং ডাচম্যান’ জাহাজের মতো অত বিখ্যাত না-হলেও, ‘এসমেরাল্দা’ পল্লবিত হতে থাকে বন্দরের পানশালার গল্পে, বুড়ো নাবিকের রোমন্থনে।
সেটা ভৌগোলিক আবিষ্কারের যুগ। ইউরোপের কয়েকটি মাত্র দেশ জাহাজ ভাসায় বহির্সমুদ্রে তখন। পর্তুগালই তাদের মধ্যে এগিয়ে রয়েছে। এই সময়েই ১৫০৩ সালে ‘দি এসমেরাল্দা’ নামে একটি পর্তুগিজ জাহাজ ওমানের ধোফার অঞ্চলের আল হাল্লানিয়াহ্ উপকূলে ঝড়ের কবলে পড়ে ডুবে যায়। উল্লেখ্য, এই জাহাজের ক্যাপ্টেন ছিলেন ভিনসেন্ট সোদ্রে। তিনি আমাদের অতি পরিচিত ভাস্কো-দা-গামার কাকা।
সেই সময়ে জাহাজডুবি ছিল নিত্যকার ঘটনা। কিন্তু এই বিশেষ জাহাজটিকে নিয়ে প্রলম্বিত হতে থাকে কিংবদন্তি। ক্যারিবিয়ান সামুদ্রের ‘ফ্লাইং ডাচম্যান’ জাহাজের মতো অত বিখ্যাত না-হলেও, ‘এসমেরাল্দা’ পল্লবিত হতে থাকে বন্দরের পানশালার গল্পে, বুড়ো নাবিকের রোমন্থনে।
আধুনিক সময়েও বার বার খোঁজ হয়েছে ‘এসমেরাল্দা’-র। ১৯৯৮ সালে গবেষকরা জাহাজডুবির সাইটটিকে শনাক্ত করতে সমর্থ হন। তবে, প্রত্নতাত্ত্বিক অনুসন্ধান শুরু করতে ২০১৩ হয়ে যায়। সম্প্রতি ডুবে থাকা ‘এসমেরাল্দা’-র ভগ্নস্তূপে পুরোদমে অনুসন্ধান চালাল ব্রিটেনের ব্লু ওয়াটার রিকভারিজ এবং ওমানের মিনিস্ট্রি এফ হেরিটেজ অ্যান্ড কালচার।
এই অভিযানে ২৮০০-রও বেশি প্রত্নবস্তু উদ্ধার হয়েছে। যার মধ্যে ১৪৯৮ সালের এক লিপি-ওয়ালা ঘণ্টা রয়েছে। তার চাইতেও বড় কথা এতে রয়েছে সেকালের স্বর্ণমুদ্রা, পর্তুগালের সেই সময়কার রাজা দোম প্রথম ম্যানুয়েলের সিলমোহর। এ সবের মধ্যেই অনুসন্ধানকারীরা পেয়েছেন এক রৌপ্যমুদ্রা। তাঁদের মতে, এটি অত্যন্ত দুষ্প্রাপ্য। জাহাজিদের কহনে এই মুদ্রা ‘দোম ম্যানুয়েলের ভৌতিক মুদ্রা’ নামে খ্যাত। এই মুদ্রার আসল নাম ‘ইন্ডিও’। এই মু্দ্রাকে ঘিরে কয়েকশো বছর ধরে পল্লবিত হয়েছে জাহাজি উপকথা।
এই আবিষ্কারকে ঘিরে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে ব্যাপক উত্তেজনা। গুঞ্জন শেনা যাচ্ছে, ‘ভুতুড়ে কয়েন’ আর ডোবা জাহাজ, ম্যানুয়েল আর ভিনসেন্ট সোদ্রে হয়ে উঠতেই পারে আসন্ন কোনও হলিউড ছবির বিষয়।
No comments:
Post a Comment